দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট ও বিভক্তি কাটিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদে দেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয়, এটি হচ্ছে বিভাজন দূর করে জাতির প্রকৃত ভবিষ্যৎ নির্মাণের রূপরেখা।
সোমবার (০২ জুন) বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার শুরুতেই কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
একটি চমৎকার ‘জুলাই সনদ’ করা সম্ভব হবে, এমন আশা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য সংস্কার কমিশন গঠন ও পরবর্তীকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর প্রথম পর্বের আলোচনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, তার মনে হয়েছিল যে হয়তো দলগুলো এ কাজে আগ্রহ পাবে না, ভেতরে ঢুকতে চাইবে না। কিন্তু দলগুলো যেভাবে গভীরে গেছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিতর্ক করেছে, তাতে তিনি আনন্দিত হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয় আছে, কাছাকাছি এসে গেছি, আরেকটু হলে আমাদের তালিকাতে আরেকটা সুপারিশ যুক্ত হয়, ওই ঐকমত্যের সুপারিশে। এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।’
প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে দূরত্ব রয়ে গেছে, দ্বিতীয় পর্বে সেগুলো ঘুচে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যেটুকু দূরত্ব ছিল, সে দূরত্ব ঘুচিয়ে এনে যাতে জুলাই সনদে বর্তমানে যতগুলো ঐকমত্যের বিষয় আছে, তার মধ্যে আরও কিছু যোগ করতে পারি। দেখতে সুন্দর লাগবে, জাতীয় একটা সনদ হলো।’
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, এ পর্যন্ত যত মিটিং করে এসেছি, সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই, যখন আপনাদের সঙ্গে বসার সুযোগ পাই, আলাপ করার সুযোগ পাই। কারণ, এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে এ রকম একটা কাজে আমি জড়িত হতে পেরেছি, নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছি।’
মন্তব্য করুন