আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে ক্লাব আতলেতিকো প্লাতেনসে। ১২০ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তারা প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগ, প্রিমেরা ডিভিশনে চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছে।
পরশু রাতে সান্তিয়াগো দে এস্তেরোর এস্তাদিও ইউনিকো মাদ্রে দে সিউদাদেসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বুয়েনস আইরেসের অপর ক্লাব উরাকানকে ১-০ গোলে পরাজিত করে শিরোপা ছিনিয়ে নেয় প্লাতেনসে। ম্যাচের একমাত্র এবং জয়সূচক গোলটি করেন উইঙ্গার গিদো মাইনেরো, ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে।
প্লাতেনসের এই জয় শুধু মাঠের সাফল্য নয়, এটি ছিল আবেগ, অপেক্ষা এবং আত্মত্যাগের এক অনন্য সংমিশ্রণ। বুয়েনস আইরেস থেকে প্রায় ১ হাজার ৪২ কিলোমিটার দূরের এই উত্তরের শহরে, হিম শীত উপেক্ষা করে দুই ক্লাবের প্রায় ৩০ হাজার সমর্থক উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে শুধুমাত্র প্লাতেনসের সমর্থকেরাই শেষ বাঁশির সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন।
ফাইনালে জয় পাওয়ার মাধ্যমে প্লাতেনসে নিশ্চিত করেছে কোপা লিবার্তাদোরেসে তাদের অংশগ্রহণ, যা দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতা। এটি তাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রাখার প্রথম সুযোগ।
এ জয় শুধু ক্লাবটির জন্য নয়, সমগ্র আর্জেন্টাইন ফুটবলের জন্যই এক আবেগঘন মুহূর্ত হয়ে উঠেছে। ক্লাবটির কোচ সের্হিও গোমেজ ম্যাচশেষে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। অন্যদিকে, প্লাতেনসে সভাপতি সেবাস্তিয়ান অর্দোনেসের নিষেধাজ্ঞা শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করায়, তিনিও মাঠে বসে দলের ঐতিহাসিক জয় উপভোগ করতে সক্ষম হন।
এ ক্লাব থেকেই শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপজয়ী দাভিদ ত্রেজেগের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার। হয়তো ভবিষ্যতে প্লাতেনসে আরও অনেক তারকার জন্ম দেবে, কিন্তু ২০২৪–২৫ মৌসুমের এই শিরোপা জয় চিরকাল ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।
এটিই যেন প্রমাণ করল—স্বপ্ন, শ্রম আর ভালোবাসা মিললে একদিন ইতিহাসও লেখা যায়।
প্লাতেনসে সেই ইতিহাসই লিখল, ১২০ বছর পর।
মন্তব্য করুন