আন্দোলনের মুখে এশিয়ার এক দেশের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পার্লামেন্টে আনা আস্থা ভোটে হেরে তিনি পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (০৩ জুন) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসান্নামস্রাইন ওয়ুন-এর্দেনে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে পদত্যাগ করেছেন। তার ছেলের বিলাসী জীবনযাত্রার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর দুর্নীতির তদন্ত শুরু এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে তিনি পদত্যাগ করেন।
ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, ওয়ুন-এর্দেনের ছেলে এবং তার বান্ধবী তাদের বাগদানের ছুটিতে একটি কালো ডিওর শোল্ডার ব্যাগ এবং বেশ কয়েকটি শপিং ব্যাগ নিয়ে বিলাসিতা প্রদর্শন করছেন। বান্ধবীর পোস্ট করা ডিওর ব্যাগের একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, জন্মদিনের শুভেচ্ছা আমাকে। আরেকটি ছবিতে এই দম্পতিকে সুইমিংপুলে চুম্বনরত অবস্থায় দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ওয়ুন-এর্দেনের পরিবার কীভাবে এমন বিলাসী জীবনযাপনের সামর্থ্য রাখে। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা তাদের আর্থিক বিষয়ে তদন্ত করছে। এই ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবারের আস্থা ভোটে ৮৮ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৪৪ জন ওয়ুন-এর্দেনের পক্ষে ভোট দেন, যেখানে ৩৮ জন তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। পার্লামেন্টের ১২৬ সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ৬৪ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল।
ভোটের পর তিনি বলেন, মহামারি, যুদ্ধ এবং শুল্কের মতো কঠিন সময়ে আমার দেশ ও জনগণের সেবা করা আমার জন্য সম্মানের বিষয় ছিল।
ভোটের আগে দুই সপ্তাহ ধরে শত শত বিক্ষোভকারী বিশেষ করে তরুণরা রাজধানী উলানবাটারে রাস্তায় নেমে ওয়ুন-এর্দেনের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। ওয়ুন-এর্দেনে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ওয়ুন-এর্দেনে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতি আরও খারাপ হয়েছে। গত বছর, সরকারি স্বচ্ছতার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ছিল ১১৪তম।
রাশিয়া এবং চীনের মাঝে অবস্থিত প্রাক্তন কমিউনিস্ট দেশ মঙ্গোলিয়া ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে গণতন্ত্রের দিকে রূপান্তরিত হচ্ছে। দুর্নীতি এখানে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। গত বছর, মার্কিন প্রসিকিউটররা মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুখবাটার বাটবোল্ডের নিউইয়র্কের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এ অ্যাপার্টমেন্ট খনির তহবিল চুরি করে কিনেছিলেন বলে কথিত রয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্বরত এ রাজনীতিবিদ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মন্তব্য করুন