তারবিহীন বিদ্যুতের বাস্তব যুগে প্রবেশ করল বিশ্ব! - প্রজন্ম ২৪ বিডি
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
৩ জুলাই ২০২৫, ৫:০৪ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

তারবিহীন বিদ্যুতের বাস্তব যুগে প্রবেশ করল বিশ্ব!

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মতো শোনালেও এটি এখন বাস্তব। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডারপা (DARPA) এক যুগান্তকারী সফলতার মাধ্যমে ৯ কিলোমিটার দূরে তারবিহীনভাবে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে।

এই কীর্তি বৈদ্যুতিক জগতের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যা ভবিষ্যতের স্মার্ট সিটি, মহাকাশ যান, দূর্গম সামরিক ঘাঁটি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপীড়িত এলাকা—সবখানেই বিদ্যুৎ সরবরাহে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।

ডারপার POWER (Persistent Optical Wireless Energy Relay) প্রোগ্রামের অধীনে এ বিদ্যুৎ প্রেরণ প্রযুক্তির মূল ভিত্তি হলো লেজার প্রযুক্তি। এতে বিদ্যুৎকে উচ্চক্ষমতার লেজার বিমে রূপান্তর করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পাঠানো হয়।

সেই লেজার রশ্মি দূরবর্তী গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেলে, সেখানে স্থাপন করা ফটোভোল্টেইক সেল (Photovoltaic Cell) এর মাধ্যমে আলোটি আবার বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ, এটি কার্যত “আলো পাঠিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার” এক অভিনব পদ্ধতি।

ডারপার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে তারা ৮.৬ কিলোমিটার দূরত্বে সফলভাবে ৮০০ ওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পরীক্ষা চালাতে গিয়ে লেজার শক্তি ব্যবহার করে দূরবর্তী স্থানে পপকর্ন তৈরি করেও এর কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়।

এই প্রযুক্তির ধারণা প্রথম উঠে আসে মহান বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার হাত ধরে, যিনি উনবিংশ শতাব্দীতেই বিদ্যুৎকে বেতার পদ্ধতিতে পাঠানোর ধারণা দিয়েছিলেন। তবে সেই সময়কার প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতায় তা বাস্তবায়িত হয়নি। আজকের এই অর্জন টেসলার সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছে।

যদিও প্রযুক্তিটি আশাব্যঞ্জক, তবে এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা। কারণ, ভুলভাবে পরিচালিত উচ্চশক্তির লেজার রশ্মি যদি মানবদেহ, প্রাণী বা বসতবাড়ির মতো সংবেদনশীল লক্ষ্যে গিয়ে পড়ে, তাহলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি যথাযথ নিরাপত্তা প্রটোকল, সেন্সরভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় লক্ষ্যনির্দেশনা, এবং নির্ভরযোগ্য অবকাঠামো গড়ে তোলা যায়, তাহলে এটি আগামী দিনের বিপ্লবী বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় পরিণত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে—প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ, মহাকাশ স্টেশন ও ড্রোনে টানা শক্তি সরবরাহ, মেরু অঞ্চলের গবেষণা কেন্দ্রে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, সেনাবাহিনীর মোবাইল ঘাঁটিতে নিরবিচারে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিশ্চিত করা—সবকিছুই সম্ভব হয়ে উঠবে।

বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে—ডারপার এই যুগান্তকারী আবিষ্কার একদিন কি বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ বিতরণের রূপটাই বদলে দেবে?

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জেনে নিন ভিপি-জিএস প্রার্থীরা কে কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন

আগামীকাল বন্ধ থাকবে শাহবাগসহ যেসব সড়ক

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হলেন ৫৯ কর্মকর্তা

আগামীকাল ঢাবিতে মোতায়েন থাকবে ২০৯৬ পুলিশ সদস্য

আগামীকাল বন্ধ থাকবে ঢাবি মেট্রোরেল স্টেশন

ভোক্তা অধিদপ্তরে নতুন ডিজি নিয়োগ

জামায়াত আমিরের সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকার উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাৎ

সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় সাবেক সচিব কারাগারে

সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত সেনাবাহিনী

নেপালে জেন জি আন্দোলনে নিহত ১৪, সহিংসতা চরমে

১০

বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল, পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে জনতা

১১

খালেদা জিয়ার নাম ভাঙিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা, সিআইডির মামলা

১২

ডাকসু নির্বাচনেরে প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার আহ্বান

১৩

ডাকসুর ছাত্রদল-শিবিরের প্রার্থীদের ফেসবুক আইডি উধাও

১৪

ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাবেক সচিবসহ গ্রেপ্তার ৬

১৫

নির্দিষ্ট সময়সূচিতে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

১৬

শাহবাগে জুলাই ঐক্যের মানববন্ধনের ঘোষণা

১৭

রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের পূর্ণ প্যানেল ঘোষণা

১৮

‘গণছুটিতে’ থাকা কর্মীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা

১৯

ডেঙ্গু প্রান নিল ৩ জনের,  ভর্তি ৫৮০ জন

২০