সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেনারেশন জেড-এর নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলনে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সহিংসতা। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮১৪জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তা সদস্য। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়ান টাইমস জানায়, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে, দুজন সিভিল হাসপাতালে, এবং একজন কাটমাণ্ডু মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহতদের পরিচয় এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
প্রথমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ঘোষণা থাকলেও, রাজধানীতে অবস্থিত ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং আকাশে গুলি ছোড়ে। তবে তাতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় এবং দ্রুতই আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়।
সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর, কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন রাজধানীর নতুন বাণেশ্বর, সিংহদরবার, নরায়ণহিটি ও আশপাশের সংবেদনশীল এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। কারফিউ চলাকালে এসব এলাকায় চলাচল, সমাবেশ এবং যেকোনো ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যেই আন্দোলনের ঢেউ দেশের অন্যান্য প্রধান শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে, যা সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে এমন গণআন্দোলন দেশটিতে বিরল, যা নেপালের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন