আকাশে কালো মেঘ, জানালার কাঁচে ঝুম বৃষ্টির পানি, আর চারপাশে একঘেয়ে উদাস ঘন বাতাস—এই মুহূর্তেই হঠাৎ আপনার মনে কি খিচুড়ি খাওয়ার তীব্র বাসনা জেগে উঠল?
হ্যাঁ! আপনি একা নন! বর্ষায় খিচুড়ি খাওয়ার এই ইচ্ছেটা যেন বাঙালির রক্তে মিশে আছে!
তবে বৃষ্টি নামলেই কেন মনে পড়ে খিচুড়ির কথা?
এই খিচুড়ি শুধু রান্নার এক পদের নাম নয়, এ এক স্মৃতি, সংস্কৃতি আর স্বস্তির গল্প।
এর উৎপত্তি বাউলদের রান্না ঘর থেকে। পথে পথে গান গাওয়া এই ছন্নছাড়া মানুষগুলো চাল-ডাল একসঙ্গে জোগাড় করে দ্রুত রান্না করতেন। সেখান থেকেই খিচুড়ির শিকড়!
অতীতে বর্ষা মানেই ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা। বাজার যাওয়া কঠিন, ঘরেই যা আছে তাই দিয়ে রান্না—আর তার সবচেয়ে সহজ সমাধান, খিচুড়ি!
চাল-ডালের সঙ্গে কিছু বেগুন ভাজা, এক টুকরো ইলিশ কিংবা ডিমের অমলেট? আহা! স্বাদে, গন্ধে আর আবেগে পরিপূর্ণ!
বর্ষাকাল শুধু রান্নার পরিবেশ পাল্টায়নি, বরং আবহাওয়ার সাথে মানুষের মনও বদলে দেয়।
মন উদাস হয়, স্মৃতি জাগে, আর তখনই খিচুড়ি হয় এক প্লেট নস্টালজিয়া।
মা-দাদির রান্না, শৈশবের গল্প, জানালার পাশে বসে খাওয়ার মুহূর্ত—সব একসঙ্গে মনে পড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—খিচুড়ি শুধুই খাবার নয়, এটি বর্ষাকালের স্বাস্থ্যসম্মত ভোজন যা শরীরকে আরোগ্য লাভে সহায়তা করে।
চাল-ডালের কম্বিনেশনে তৈরি হওয়ায় এতে ফাইবার বেশি, হালকা অসুস্থতা প্রতিরোধেও সহায়ক।
পানিবাহিত রোগ বেড়ে যাওয়ার এই সময় গরম খিচুড়ি হতে পারে সুরক্ষার এক আশ্বাস।
তাই তো বলা হয়—মেঘলা দিন আর খিচুড়ি যেন যুগলবন্দি প্রেমিক।
একদিকে প্রকৃতির রোম্যান্স, আরেকদিকে খিচুড়ির গন্ধে ভরপুর মনখারাপের টনিক!
গরম এক প্লেট খিচুড়ি মানেই—বর্ষার সবচেয়ে সেরা উপহার!
মন্তব্য করুন