সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় গঠন করতে হবে। আইনজীবীদের মতে, এই রায়ের ফলে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠনের পথে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।
এর আগে, গত ১৩ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয় এবং রায়ের জন্য ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আদালত বন্ধু (Amicus Curiae) হিসেবে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী শরীফ ভূইয়া এবং ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।
২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবী এই রিট দায়ের করেন। তারা হলেন: মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মো. জহিরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল্লাহ সাদিক, মো. মিজানুল হক, আমিনুল ইসলাম শাকিল ও যায়েদ বিন আমজাদ।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং কেন পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠন করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এছাড়া, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনে অগ্রগতি জানিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২৫ সালের ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বিষয়টি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো
মন্তব্য করুন