রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট তৌফিক ইসলাম সাগর ১ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন। এদিকে তার মৃত্যুতে রাজশাহীর গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে তার বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়।
জানা গেছে, তৌকিরের স্ত্রীর নাম আকশা আহম্মেদ নিঝুম, তিনি ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। ঢাকায় বিমানবাহিনীর কোয়াটারে থাকতেন এই নবদম্পতি। সর্বশেষ গেল কোরবানি ঈদে (জুন মাসে) রাজশাহীর বাসায় এসেছিলেন তৌকির। এরপরে ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে আর রাজশাহীতে আসেননি পাইলট তৌকির।
গাড়িচালক আলী হাসান বলেন, তার (তৌকির) বিয়ে হয়েছে ঢাকার গাজীপুরে। নিঝুম ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাদের একবছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে গেল ফেব্রুয়ারিতে নগরীর নানকিং কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে তোলা হয়। এরপর থেকে তারা ঢাকায় থাকেন।
তিনি আরও বলেন, ঈদের ছুটিতে রাজশাহীতে এসেছিলেন। এখানে কোরবানিও দেন তারা। এরপরে ছুটি শেষে স্যারকে গাড়িতে করে ঢাকায় রেখে আসি। তিনি (তৌকির) অনেক নম্র ও ভদ্র মানুষ। বিমানবাহিনীর কোয়াটারে তাদের নামিয়ে দেওয়ার পরে (তিনি) পুরো এলাকা ঘুরিয়ে দেখান। অনেক ভালো মনের মানুষ তিনি। কোনো অহঙ্কার নেই তার মনে।
সাগরের মামা শওকত আলী জানান, ছোট থেকেই সাগরের স্বপ্ন ছিল পাইলট হবেন। পরিবারের ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে অফিসার হবেন তিনি। তবে নিজের স্বপ্নেই অটল ছিল সাগর। পড়ালেখায় ছিলেন মেধাবী। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলে। এরপর ভর্তি হন পাবনা ক্যাডেট কলেজে, সেখান থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। পরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন তিনি।
তৌকিরের আরেক মামা সেলিম জানান, প্রায় বছর খানেক তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু দুইমাস আগে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে। তার স্ত্রী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। আগামীকাল রাজশাহীতে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
প্রসঙ্গত, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও দুর্ঘটনায় শতাধিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ১৭১ জনকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, দগ্ধদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।
মন্তব্য করুন