রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে সকাল ১০টা থেকে জমায়েত হন শত শত শিক্ষার্থী। মুহূর্তেই মিছিল আর প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। একদিন আগে তাদের কলেজ ক্যাম্পসে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় শোকাহত শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’, এমন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা গোলচত্বরে সড়কের ওপর বসে পড়েন। এ সময় পুলিশ একাধিকবার তাদের সরে যেতে বললেও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোনো সহিংসতা চাই না। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো কেউ দায় নিচ্ছে না। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এ অবিচারের বিচার চাই।
শিক্ষার্থীদের ৬য় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, নিহতদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ প্লেন বাতিল ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সংস্কার।
এর আগে সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়েছে একটি প্রশিক্ষণ বিমান। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৫ জনই শিশু। নিহতদের মধ্যে বাকি দুজনের মধ্যে একজন হলেন বিমানটির পাইলট এবং অপরজন এক নারী শিক্ষিকা।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়ন করে। দেড়টার কিছু সময় পর এটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার তৌকির।
জানা গেছে, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর মাইলস্টোন স্কুলের ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। ভবনটির নাম হায়দার হল।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো-
১. দুর্ঘটনায় নিহতদের সঠিক নাম ও পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।
২. আহতদের নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
৩. ঘটনাস্থলে শিক্ষকদের গায়ে ‘হাত তোলার’ অভিযোগে নিঃশর্ত প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৪. নিহত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫. বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল করে নতুন ও নিরাপদ প্লেন চালু করতে হবে।
৬. বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ এলাকা মানবিক ও নিরাপদভাবে পুনর্বিন্যাস করতে হবে।
মন্তব্য করুন