কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে প্রশাসনকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় মো. করিম নামের এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাল্টা ব্যবস্থা নেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজার শহরের কস্তরাঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর মোহনায় উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটে। আহত কনস্টেবল করিম কক্সবাজার পুলিশ লাইন্সে কর্মরত রয়েছেন।
জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) যৌথভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। ‘বদরমোকামস্থ উকিলপাড়া সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণ’ ব্যানারে তারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
এক বিক্ষুব্ধ নারী সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের ক্রয়কৃত জমি জবরদখলের চেষ্টা চলছে নদী উদ্ধারের নামে।”
বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনের দিকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারে। এতে পুলিশ সদস্য করিম মাথায় আঘাত পান। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দুপুর ১২টার দিকে অভিযান পুনরায় শুরু করা হয়। এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী আতিকউল্লাহ ওরফে সিআইপি আতিকের দখলে থাকা জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত করতে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সরকার বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী ৭২১ একর জমিকে নদীবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে এবং জেলা প্রশাসনকে ওই জমি বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়। তবে এর মধ্যে প্রায় ৩০০ একর জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, “নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ৫ একরের বেশি জায়গা থেকে প্রায় ২০০টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ অভিযান চলবে এবং আনুমানিক দুই হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
মন্তব্য করুন