নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হাবিব ইসলাম (৩২) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন শ্রমিক।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ইপিজেড গেট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত হাবিব ইসলাম জেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকার বাসিন্দা দুলাল হোসেনের ছেলে। তিনি ইপিজেডের ভেনচুরা লেদার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার থেকে মোট ২৩ দফা দাবিতে উত্তরা ইপিজেডে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শ্রমিকরা। তাদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জেনারেল ম্যানেজারের পদত্যাগ, পুরাতন শ্রমিকদের পুনর্বহাল, ছাঁটাই বন্ধ, পূর্বের লেঅফ পদ্ধতি চালু, নামাজের সময় নিশ্চিতকরণ, বকেয়া বেতন পরিশোধ, ও স্বেচ্ছা পদত্যাগে লেঅফ সুবিধা নিশ্চিত করা।
সকালে শ্রমিকরা ইপিজেডের গেটে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়। এতে হাবিব ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তানজিরুল ইসলাম ফারহান জানান, হাবিবকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার বুকে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, আন্দোলনের কারণে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ইপিজেডের কয়েকটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। মাসের শুরুতে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। একইসঙ্গে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে।
একজন নারী শ্রমিক আখি আক্তার বলেন, “গেট বন্ধ ছিল, সেনাবাহিনী ভেতরে অবস্থান করছিল। হঠাৎ করে গুলি চালানো হলো। কোনো ক্ষতি না করেও আমাদের ভাইয়েরা গুলিবিদ্ধ হলো, এটা কেমন ন্যায়বিচার?”
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন