পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চার দফা দাবি আদায়ে গনছুটি অংশ হিসেবে জয়পুরহাটের সমিতির ৪১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় রয়েছে তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয়, একটি উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ১০টি সাব-স্টেশন। এখানে মোট ৪১১ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত। তবে চার দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণছুটি নেন ৩৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিদ্যুৎ বিভাগের কড়া নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তারা কাজে যোগ দেননি। অভিযোগ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা মোবাইল ফোন জমা দিয়ে চলে গেছেন, ফলে গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধান কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
ফলে সমিতির অধীনস্থ ১০টি সাব-স্টেশনের মধ্যে ৯টিতে কোনো লোকবল ছিল না, যা বিদ্যুৎ সেবায় চরম অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার গ্রাহক।
জয়পুরহাট সদর দপ্তরে সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কর্মী অনুপস্থিত। গ্রাহকরা বিভিন্ন সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স (ও অ্যান্ড এম) বিভাগে মাত্র ৫-৬ জন কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন। বিভাগটির একজন প্রকৌশলী জানান, এখানে একজন এজিএমসহ মোট ২১ জন কর্মরত থাকার কথা, কিন্তু ৮ জন ছুটির দরখাস্ত দিয়ে এবং আরও ৫ জন ছুটি ছাড়াই কাজে অনুপস্থিত রয়েছেন।
মঙ্গলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবু কাহার অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়ির মিটারে বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বেশি এসেছে। তাই সদর দপ্তরে এসে অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখি, কেউ নেই। একজন বললেন, আন্দোলনের কারণে কেউ আসেনি। গ্রাহকদের জিম্মি করে এভাবে আন্দোলন করা মোটেও যৌক্তিক নয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবু উমাম মো. মাহবুবুল হক জানান, আজ ৩৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে আসেননি। ৯টি সাব-স্টেশন সম্পূর্ণ লোকবলশূন্য। অভিযোগ কেন্দ্রের মোবাইল জমা দেওয়ায় সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যেই আবার লোডশেডিং শুরু হয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মন্তব্য করুন