ঈদের ছুটিতে চিকিৎসাসেবার দুর্ভোগ লাঘবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - প্রজন্ম ২৪ বিডি
স্টাফ রিপোর্টার
৭ জুন ২০২৫, ৮:৩৭ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

ঈদের ছুটিতে চিকিৎসাসেবার দুর্ভোগ লাঘবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবিঃ সংগৃহীত

ঈদ আনন্দে সবাই মেতে থাকলেও দুর্ঘটনার শিকার কিংবা অসুস্থ ব্যক্তিদের জীবনে হাসি নেই। অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে। সেখানে পৌঁছানোর পরও রোগীর ভিড়ে চিকিৎসাগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। চিকিৎসাসেবা পর্যাপ্ত না হওয়ায় নীরব কান্না হাসপাতালে আগত রোগীদের। এ কারণে হাসি-আনন্দ ভুলে যন্ত্রণা সহ্য করেই কাটাতে হচ্ছে ঈদের দিন।

চলতি বছর বাংলাদেশে ৫ জুন থেকে টানা ১০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে, ফলে এ ঈদে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে প্রায় সবার মাঝে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মতো জায়গায় শান্তির পরিবর্তে অশান্তি। হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় জরুরি সেবার চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলছে। আর ভোগান্তি বেড়েছে রোগীদের।

এদিকে চিকিৎসাসেবার সংকট গুরুত্ব বুঝতে পেরে বিস্তৃত নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মূলত ঈদের ছুটি যেন রোগীদের জন্য কষ্টে পরিণত না হয়, সে জন্যই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান নির্দেশনাসমূহ

১. জরুরি বিভাগে প্রয়োজনে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে-প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে।

২. জরুরি বিভাগ ও লেবার ঘুম, ইমারজেন্সি ওটি, ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৩. কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।

৪. প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করবেন।

৫. সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালককে অবহিত করে শুধু মাত্র ঈদের ছুটিকালীন সময়ে নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় করতে পারবেন।

৬. হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ইউনিট প্রধানেরা দৈনিক তাদের বিভাগীয় কার্যক্রম তদারকি করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহে জরুরি সেবা, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনকল সেবা চালু রাখতে হবে।

৭. ছুটি শুরু হবার পূর্বেই ছুটিকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আইডি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিক ভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটি কালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করবেন।

৮. অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৯. ছুটিকালীন সময়ে হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগাম পত্র দিতে হবে।

১০. ছুটিকালীন সময়ে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১১. প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানগণ জুটি কালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন।

১২. প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকর্তা সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর উধর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

১৩. প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

১৪. বহিঃবিভাগ একাধারে ৭২ ঘণ্টার অধিক বন্ধ রাখা যাবে না। এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।

১৫. সব বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক জরুরি ও প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখবে। খ) কোন রোগী রেফার করার আগে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং যাত্রাপথের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

১৬. পশুর হাটের নিকটবর্তী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে।

১৭. যেকোন দুর্যোগ, অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোলরুম-কে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে।

ডিজিএইচএসের পরিচালক ডা. মঈনুল আহসান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে আমাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় আমরা তাদের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার জরুরি ও মাতৃত্বসেবা নিশ্চিত করা।

অন্ধকারের মাঝে আশার আলো

এ ব্যবস্থা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হলে ঈদের ছুটিতে নিস্তব্ধ করিডোর, অশ্রুসজল অপেক্ষা, অবর্ণনীয় কষ্টের যে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় -তা পরিবর্তিত হয়ে দায়িত্বশীল চিকিৎসাসেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

আহমেদ ও তার মতো হাজারো মানুষের জন্য এক মুহূর্তের বিলম্বই সারাজীবনের কষ্টের কারণ হতে পারে। ছুটি যেন কখনোই সুস্থতার পথে বাধা সৃষ্টি না করে। সবাই যখন ঈদ উদযাপন করছে, তখন হাসপাতালগুলোর কথা স্বরণ রাখতে হবে-ব্যথা কখনো ছুটি নেয় না।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসুতে দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের মৃত্যু

ডাকসুর মধ‍্য দিয়ে ইলেকশনের ট্রেনে উঠলো বাংলাদেশ: উপদেষ্টা ফারুকী

নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে : এসএম ফরহাদ

টিএসসি কেন্দ্রে তিন ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ

সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের ইউল্যাব স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া অভিযোগ

নির্বাচন চলাকালে পোলিং অফিসারকে অব্যাহতি

ডাকসুতে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী: সাদিক কায়েম

দুই ঘণ্টায় ২ কেন্দ্রে এক হাজারের বেশি ভোট পড়েছে

ভোটারকে আগে পূরণকৃত ব্যালট পেপার দিলেন পোলিং অফিসার

পাইলসের পরিবর্তে পিত্তথলির অপারেশন

১০

ফের মহাসড়ক অবরোধ, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যান চলাচল বন্ধ

১১

ভোট সুষ্ঠু হলে ফল যা-ই হোক মেনে নেব: ছাত্রদল সভাপতি

১২

নিয়ম ভেঙে ভোট কেন্দ্রে ঢুকলেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল

১৩

হামাসের হামলায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত

১৪

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদচ্যুত

১৫

শুরু বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসুর ভোটগ্রহণ

১৬

জেনে নিন ভিপি-জিএস প্রার্থীরা কে কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন

১৭

আগামীকাল বন্ধ থাকবে শাহবাগসহ যেসব সড়ক

১৮

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হলেন ৫৯ কর্মকর্তা

১৯

আগামীকাল ঢাবিতে মোতায়েন থাকবে ২০৯৬ পুলিশ সদস্য

২০