ফরিদপুর শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে হ্যাপি বেগম (৩৫) নামে এক রোগীর পাইলসের পরিবর্তে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করে ডাক্তার। এতে ওই রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ভুল অপারেশনের বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফরা।
সোমবার (৮ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সূফি সড়কের সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রোগী জেলার সদরপুর উপজেলার আসলাম হোসেনের স্ত্রী।
খবর পেয়ে সিভিল সার্জন ও বিএমএ নেতৃবৃন্দসহ অনেকে হাসপাতালটিতে ছুটে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে সত্যতা পেয়ে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেচে, দুপুরের দিকে হ্যাপি বেগম পাইলসের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন এবং হাসপাতালটির চিকিৎসক ফজলুল হকের (শোভন) শরণাপন্ন হন। কিন্তু, সন্ধ্যা ৭টায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করিয়ে পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন মো. নজরুল ইসলাম নামে আরেক চিকিৎসক।
ঘটনার ৩ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগীকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে রোগীর স্বজনরা প্রশাসন, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের বিষয়টি অবগত করেন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহামুদুল হাসান, বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আলি আকবর হাওলাদার হাসপাতালে আসেন। এ সময় তারা ওই রোগীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
রোগীর মেয়ে জান্নাতি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে আরেকজন রোগী ভর্তি ছিল, তার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। কিন্তু তার জায়গায় আমার আম্মুকে অপারেশন করেছে। কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়া কেন অপারেশন করল। আমার আম্মুর কিছু হলে কাউকে ছাড়ব না।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ডাক্তার ঠিকভাবে কাগজপত্র দেখেননি। এ কারণে পাইলসের রোগীর পিত্তথলিতে অপারেশন করা হয়েছে। আজ থেকেই এ হাসপাতাল বন্ধ থাকবে এবং আগামীকাল তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের প্রেক্ষিতে হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন