পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনার জেরে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন গলাচিপা থানার ওসি মো. আশাদুর রহমান। তিনি জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস বলেন, আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মী সভা চলছিল। সেই সময় হঠাৎ করেই ভিপি নুরের সমর্থকরা আমাদের অফিসে হামলা চালায়, চেয়ার-টেবিল ও নেত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। এতে আমাদের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন চর বিশ্বাস ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মাকসুদ খান। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন চর বিশ্বাস ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমীন, যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আল মুইন, চর বিশ্বাস ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান ইসলাম নাইম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. বাপ্পি, ৬নং ওয়ার্ড সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. লোকমান, চর বিশ্বাস ইউনিয়ন ছাত্রদল সদস্য শিহাব খলিফা, চর বিশ্বাস ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হৃদয় মামুন, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির বয়াতি, চর বিশ্বাস ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মফিজ, চর কাজল সেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈকত দফাদার, চর কাজল ছাত্রদল সদস্য মেহেদী ও তরিকুল, চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির অফিস সহায়ক সোহেল।
অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ভিন্ন বক্তব্য উঠে এসেছে। ইউনিয়নের সদস্য সচিব মো. জুয়েল বলেন, ‘আমাদের পূর্ব নির্ধারিত বাজার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা ছিল। শুরুতেই পাশের বিএনপি অফিস থেকে উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়। আমরা সময় চেয়ে কথা বললেও তাদের একজন উচ্চস্বরে অশালীন মন্তব্য করে। এক পর্যায়ে তাদের নেতাকর্মীরা ভিপি নুরের ছোট ভাই আমিনুল ইসলামকে মারধর করে।’
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। তারা হলেন, ভিপি নুরের ছোট ভাই আমিনুল, ইউনিয়ন ছাত্র অধিকার পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি কনক, সাধারণ সম্পাদক জিহাদ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক শামিম, কে আলী কলেজ শাখার সভাপতি শামিম, জিহাদ আকন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের যুবঅধিকারের যুগ্ম সদস্য সচিব জালাল।
গণঅধিকার পরিষদের অভিযোগ, বিএনপির কর্মীরা তাদের অফিসের চেয়ার নিজেরাই ভেঙে সংঘর্ষকে পুঁজি করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে।
ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ওসি আশাদুর রহমান জানান, ‘পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে প্রস্তুত আছি।’
উভয় পক্ষের বক্তব্য যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন