জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন- ‘আমি স্বেচ্ছায় মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত আমার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সমস্ত পরিস্থিতির সত্য এবং বিস্তারিত প্রকাশ করতে ইচ্ছুক।’ এরপর তার নিরাপত্তা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন তার আইনজীবী। ১০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দুপুরে অভিযোগ গঠনের সময় ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে দায় স্বীকার করেন তিনি।
এ সময় ট্রাইব্যুনাল তার রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন মঞ্জুর এ করে আদেশ দেন। এরপর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) গঠন করে আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ আমি আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে করতে চাই।’
আইনজীবীরা বলেন, কোনো আসামি এ ধরনের স্বীকারোক্তি দিলে তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেই হিসেবে সাবেক আইজিপিকে এ মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে দোষ স্বীকারের পর মামুনকে আলাদা সেলে রাখা ও নিরাপত্তা দিতে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। পরে আদালত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউশন টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘মামুন বলেছেন, তিনি একজন সাক্ষী হিসেবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের যে সব ঘটনা ঘটেছে সমস্ত কিছু জানেন। তিনি সমস্ত তথ্য আদালতকে উদ্ঘাটনের ব্যাপারে সহায়তা করতে চেয়েছেন। সেই প্রার্থনা আদালত মঞ্জুর করেছেন। সুতরাং তিনি পরবর্তী সময়ে আদালতের সুবিধাজনক সময়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালতকে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সাহায্য করবেন। এতে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন।’
মন্তব্য করুন