১৬ জুলাই ২০২৪ — ইতিহাসের পাতায় আগুনে লেখা এক দিন। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে মারে পুলিশ, আর সেই মৃত্যু মুহূর্তেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
ছাত্রলীগের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসে। ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড়ে ছাত্রলীগ ও কোটাবিরোধীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে রাজপথ। পুলিশ বক্সে চালানো হয় আক্রমণ, বিকেলেই আসে ২ জন নিহতের খবর।
ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর— চারদিকে ধোঁয়া, গুলির শব্দ আর লাঠিচার্জ। বিজিবি মোতায়েন করা হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্থগিত হয় এইচএসসি পরীক্ষা!
চট্টগ্রামে নিহত হন শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ ৩ জন, আহত অর্ধশতাধিক। ঢাকায় দেড় শতাধিক আহত, জাহাঙ্গীরনগরে মধ্যরাতের হামলায় পাঁচজন সাংবাদিকসহ আহত শতাধিক শিক্ষার্থী।
একদিকে ছাত্রলীগের হামলা, অন্যদিকে জনগণের প্রতিরোধ!
মোহাম্মদপুর, ব্র্যাক, ইউআইইউ, চুয়েট—সব জায়গায় ছাত্রছাত্রীরা অবরোধ গড়ে তোলে।
বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষোভ ডাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টা সমাবেশের ডাক দেয় ছাত্রলীগ—উত্তেজনা পৌঁছায় চরমে!
এই দিনেই সংহতি জানায় ছাত্রদল, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরাসরি আঘাত করেন সরকারের নির্যাতনের নীতির ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রও নিন্দা জানায়, আর সেই নিন্দায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আন্দোলনের পক্ষে স্ট্যাটাস দেয়ায় বিনিয়োগ বাতিল করে সরকার, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক দাবি করেন—”মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রবণতা বেড়েছে!”
আবু সাঈদের মৃত্যু যেন পুরো দেশের ছাত্র-জনতার হৃদয়ে একসাথে বিস্ফোরণ ঘটায়। অনেকের কাছে ১৬ জুলাই শুধু একটি তারিখ নয়—এটা এক জ্বলন্ত প্রতিবাদের দিন, যার আগুন এখনো দাউদাউ করে পুড়ে চলেছে জাতির বুকের ভেতর।
মন্তব্য করুন