বনিবনা না হওয়ায় খু'ন: সোহাগের স্ত্রী - প্রজন্ম ২৪ বিডি
সারাদেশ ডেস্ক
১৩ জুলাই ২০২৫, ৫:০২ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

বনিবনা না হওয়ায় খু’ন: সোহাগের স্ত্রী

পুরো নাম লালচাঁদ ওরফে সোহাগ। আগে চাকরি করলেও বছর কয়েক আগে ব্যবসা শুরু করেন তিনি; যা নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। হয় ব্যবসার শেয়ার, না হয় মাসে মাসে দুই লাখ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করেন তারা।

কিন্তু এতে রাজি না হওয়ায় সোহাগের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে সমাধানের কথা বলে সোহাগকে ডেকে নেওয়া হয়। বনিবনা না হওয়ায় তাকে পিটিয়ে এবং পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম।

গতকাল সকালে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুরে সোহাগের গ্রামের বাড়িতে গেলে তার সঙ্গে কথা হয়। স্বামীকে হারিয়ে দুই ছেলে–মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লাকি বেগম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন হত্যাকারীরা। আমার স্বামীর ব্যবসা তারা সহ্য করতে পারছিলো না। তারা প্রতি মাসে দুই লাখ করে টাকা চাইছিল। আমার স্বামী তা দিতে চায়নি। আর এ কারণেই নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

ঘটনার দুদিন পর শুক্রবার এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে সারা দেশে চলছে বিক্ষোভ।

শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে ৩৯ বছর বয়সী সোহাগের মৃতদেহ বরগুনায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। পরে ইসলামপুর গ্রামে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার সোহাগের বড় বোন মঞ্জুরা বেগম কোতোয়ালী থানায় ১৯ জনের নামে হত্যা মামলা করেন।

গতকাল সকালে সোহাগের গ্রামে বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর আনাগোনা দেখা যায় । স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্ত্রী লাকি বেগম। সোহাগের ১২ বছরের ছেলে সোহান এবং ১৪ বছরের মেয়ে সোহানাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা জানা নেই কারো। এলাকাজুড়ে চলছে শোকের মাতম।

সোহাগের বড় বোনের স্বামী আব্দুস সালাম বলেন, দীর্ঘ দিন আগে জীবিকার তাগিদে মা আলেয়া বেগম শিশু সোহাগ ও তার আরও দুই মেয়েকে নিয়ে বরগুনা ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। সেই সময় থেকে সোহাগ ঢাকায় বসবাস করতেন।

শুরুর দিকে কিছুদিন সোহাগ চাকরি করলেও পরে মিডফোর্ড হাসপাতালের সামনে মেসার্স সোহানা মেটাল নামে একটি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। মা মারা যাওয়ার পর থেকে সোহাগ তার স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে ঢাকার জিঞ্জিরা কদমতলী কেরাণীগঞ্জ মডেল টাউন এলাকায় বসবাস করতেন। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় এক সময় সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

সোহাগের ছেলে সোহান বলে, চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় ওর বাবাকে মেরে ফেলা হয়। আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি, আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমরা তাদের বিচার চাই।

সোহাগের বড় বোন এবং মামলার বাদী মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, আমার ভাই প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছিলেন। প্রতি মাসে তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এছাড়া তার ব্যবসাটাও নিয়ে নিতে চেয়েছেন আসামিরা। তবে আমার ভাই তাদেরকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন এবং নির্মমভাবে পাথর মেরে হত্যা করে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত

ফের অবরুদ্ধ দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব

২৪ তারিখের পরীক্ষাও স্থগিত

বিমান বিধ্বস্তে নিহতের সংখ্যা ৩১ পৌঁছেছে : আইএসপিআর

জানাজা শেষে পাইলট তৌকিরের মরদেহ রাজশাহীর পথে

আহতদের চিকিৎসায় জামায়াতের ৫০ লাখ টাকা ও ২০ সার্জন নিযুক্ত

বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে উপচে পড়া ভিড়

আহতদের চিকিৎসায় সিঙ্গাপুরের মেডিকেল টিম

মেহেরীন চৌধুরী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাতিজি

মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে শোক কর্মসূচি ক্রীড়া সংগঠনগুলোর

১০

৬ দফা দাবিতে উত্তাল মাইলস্টোন

১১

মাইলস্টোনে গিয়ে তোপের মুখে আইন উপদেষ্টা

১২

রাজশাহীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তৌকির

১৩

নিহতদের সম্মানে দুপুরের পর বন্ধ থাকবে হাইকোর্টের বিচারকাজ

১৪

বিমান দুর্ঘটনায় ব্রিটিশ মন্ত্রীর শোক প্রকাশ

১৫

আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে সরকার: স্বাস্থ্য উপদেষ্টার

১৬

বিয়ের বছর না ঘুরতেই চলে গেলেন পাইলট তৌকির

১৭

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতিসংঘের সমবেদনা

১৮

পরিবারের কাছে হস্তান্তর ৮ মরদেহ

১৯

হতাহতের সংখ্যা গোপনের দাবি সঠিক নয় : প্রেস উইং

২০